Monday, January 19, 2009

স্বপ্ন সমুদ্র

আমি আজ সমুদ্র দেখব, যে করেই হোক সমুদ্রকে কাছে থেকে দেখার শখ আমার। আমি সমুদ্রকে দেখব আমার করে। আজ আমার কোন কাজ নেই তাই খুব সকালে আমি সমুদ্রের কাছে চলে এলাম। সূর্য ওঠা থেকে ডোবা পর্যন্ত সমুদ্রের কাছে থাকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ আমার। যাই হোক ,সমুদ্র শুধুই আমার আমি আমার মত করে সমুদ্রকে দেখতে চাই। অবশেষে রক্তিম আভায় চারিদিক আলোকিত করে দেখা পেলাম সূর্যের। সূর্য, আমি এব সমুদ্র আমরা অনেকক্ষণ কথা বললাম। সমুদ্রকে আমি অনেক প্রশ্ন করলাম। সে আমাকে সবগুলো প্রশ্নের উত্তর দিল। সমুদ্রকে আমি প্রশ্ন করলাম তুমি এত বিশাল কেন সমুদ্র আমাকে উত্তর দিল ,তোমরা আছো বলেই। তার ভাল লাগার সাথে আমার ভালো লাগা মিলে গেল। আর এর মধ্যে সূর্য আমাকে প্রশ্ন করল, কি শুধু সমুদ্রের সাথেই কথা বলবে আমার সাথে কথা বলবে না । আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকালাম, ও .. তাই তো তোমার সাথে ও আমার কথা আছে।
আমি তার দিকে তাকিয়ে বললাম , বলতো তুমি প্রতিদিন সকালে ওঠ আবার সন্ধ্যায় অস্তমিত হয়। আসলে তুমি কোথায় যাও….হেসে সূর্য আমাকে বলল আমার যেখানে শুরু সেখানেই আমার শেষ। আমি এর উত্তর বুঝলাম না।
আস্তে আস্তে দেখলাম সূর্যটা খুব বড় হতে লাগলো্ ।
বড় হতে হতে ,আমার সাথে কথা বলতে বলতে, আমার সামনে থেকে অনেক দূরে যেতে লাগলো এর মধ্যে সে ছোট হতে লাগল ।আমি বললাম যেও না ,আমাকে ছেড়ে যেও না, সূর্য তখন উত্তর দিল, যাচ্ছি না.. এই তো আমি তোমার কাছাকাছি । তাহলে তোমার সাথে আমার এত দূরত্ব কেন।আগের মত আমার কাছে এসো না । আসব!তবে তোমার মত আমার আরও অনেক বন্ধু আছে তাদের সাথেও যে আমাকে দেখা করতে হবে।আমি তো আছি , কিন্তু অনেক দূরে, আগের মত কাছাকাছি না তো! আসি বন্ধু বলে আস্তে আস্তে সূর্য আমায় ছেড়ে দূরে যেতে লাগল। আমি কিন্তু তোমার সাথে কথা বলা ছাড়া বাড়ি যাব না।আমি বসে থেকে সমুদ্রের সাথে কথা বলতে লাগলাম। সূর্য চলে যাবার পর আমি আর সমুদ্র খেলা করতে লাগলাম।আস্তে আস্তে আমি সমুদ্রের নামতে লাগলাম । সমুদ্রের ঢেউ এর সাথে খেলা করতে লাগলাম।শামুক , ঝিনুক , বালি, গাছপালা ,ছোট ছোট কীট-পতঙ্গ আর অজানা সব প্রাণীর সাথে কথা বলতে ও খেলা করা শুরু করলাম। তারা সবাই আমার সবচেয়ে ভাল বন্ধু হয়ে গেল। সমুদ্রের ঢেউ এসে আমার সাথে মজা করতে লাগল।আচ্ছা সমুদ্র তুমি এত বিশাল অথচ তোমার কোন অহংকার নেই।আর আমরা কত না বিচিত্র আমাদের মাঝে হিংসা ,অহমবোধ , হানাহানি, মারামারি, ভেদাভেদ আরোও কতকিছু। কিন্তু তোমাকে দেখলে আমার অনেক ভালে লাগে।জান সমুদ্র আমার না কেউ নেই। যে আমার মত করে আমাকে ভালবাসবে। তারা সবাই খুব ব্যস্ত থাকে নিজেকে নিয়ে। তারা কখনও আমার কথা ভাবে না । বাবা থাকেন নিজের ব্যবসা নিয়ে আর মা থাকেন তার মিটিং জনসভা আর বিউটি পার্লার নিয়ে। আমাকে সারাক্ষণ একা বাসায় থাকতে হয়। তারজন্যই আজ আমি চুরি করে বাসা থেকে পালিয়ে এসে তোমার কাছে আশ্রয় নিয়েছি।কথা বলতে বলতে এক সময় আমার দু’চোখ গড়িয়ে জল বের হয়ে এল । আর তখন সমুদ্র তার সবটুকু সৌন্দর্য দিয়ে আমার কাছে হাত বাড়ালো। এমন সময় আকাশ তার সৌন্দর্যের সবটুকু নীল ছড়িয়ে সমুদ্রের গায়ে মাখিয়ে দিল । ঠিক তখনই আমার মনে হল আকাশ যেন আমার কথা ভেবে তার নীল দিয়ে সমগ্র আকাশকে ঢেকে দিল । সমুদ্র আকাশের নীলগুলোকে খুব যত্নসহকারে তার ঢেউয়ের ভাজে ভাজে ছড়িয়ে দিল। আকাশের মত বিশাল আকৃতির ঢেউগুলো আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে অনেক দূর।বিশাল সমুদ্রের সামনে আমাকে মনে হয় বালুর একবিন্দু ক্ষুদ্র কণা। মানুষের মনে বিশালতা বলে কিছু নেই আমার ঠিক তখনই মনে হল। এভাবেই আমার সারাটাদিন কাটল। আমি এখন সমুদের সাথে কথা বলা শেষ করলাম। ঠিক তখনই আমার সূর্যের কথা মনে হল । সূর্য তুমি কোথায়? আমি এখন বাসায় যাব। দয়া করে একটু কাছে আস না । সূর্য হেসে উত্তর দিল এই তো আসছি... পশ্চিম আকাশে লাল আভা ছড়িয়ে দি্য়ে সূর্য আবার আমার কাছে চলে এল । সূর্য আমি এখন বাসায় যাব। আচ্ছা তবে বিদায়। তারপর আমি সমুদ্রের সাথে কথা বলতে শুরু করলাম ... সমুদ্র আজ আমি তোমাকে দেখে মুগ্ধ হলাম । আমি যদি প্রতিদিন তোমার কাছে এভাবে আসতে পারতাম। তাহলে কি মজাই না হত । সমুদ্র বলল.. প্রতিদিন আসলে আমার প্রতি তোমাদের ভালবাসা কমে যেত।যাও আজকের মত বাড়ি ফিরে যাও । আবার হয় তো তোমার সাথে দেখা হবে। আমি বললাম না আমি বাড়ি যাব না !আর এর মধ্যেই মা খুকু বলে আমাকে জাগালেন । সমুদ্র দেখা আমার হল তবে তা স্বপ্নের মধ্যে সামনা সামনি না । জানিনা কখনও একাকী সমুদ্র দেখতে পারব কিনা । তবুও আমার মনে হয় আমি সমুদ্রকে দেখব আমার মত করে ।
আসলে চুরি করা বলতে আমরা সারাদিন যা ভাবি রাতে তা স্বপ্নের মাধ্যমে প্রকাশ করি ।আর একা থাকলে যে কেউ ঐ রকম ভাবতেই পারে। এটাই স্বাভাবিক। আর তা হচ্ছে স্বপ্ন সমুদ্র।

Monday, January 5, 2009

চরিত্র ও আচরণ

নীতিবিজ্ঞান সমাজে বসবাসকারী মানুষের আচরণের নৈতিকমূল্য নির্ধারণ করে যে আচরণ বা কাজ এ নৈতিক আর্দশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তা ন্যায় যা ভাল বলে বিচার করা হয় কিন্তু যে কাজ এ আর্দশের সাথে সামঞ্জস্যহীন তা অন্যায় , মন্দ বা অনুচিত বলে বিবেচিত হয় মানুষের সব আচরণ নৈতিক বিচারের বিষয়বস্তু নয়, কেবল ঐচ্ছিক ও অভ্যাসগত ক্রিয়াই নৈতিক বিচারের আওতাধীন আর আচরণ নানাভাবে চরিত্রের সাথে সম্পর্কিত


চরিত্র:


ইংরেজি Character শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে চরিত্র চরিত্র শব্দটি দুটি অর্থে ব্যবহ্নত হয়


যেমন :


সংর্কীন অর্থে এবং বৃহদার্থে


সংর্কীন অর্থে চরিত্র বলতে নৈতিক চরমগুণকে বুঝায়


এ অর্থে আমরা সচরাচর বলে থাকি যে, জীবনের মুকুট ও গৌরব হচ্ছে চরিত্র


যেমন কোন ভালো আচরণ দেখলে আমরা মন্তব্য করে থাকি ভদ্রলোকটি চরিত্রবান ভালোই মনে হয় ইত্যাদি ইত্যাদি...


ব্যাপক অর্থে, চরিত্র মনের স্থায়ী প্রবণতা যা ইচ্ছার স্থায়ী অভ্যাস থেকে গঠিত ও বিকশিত হয় চরিত্র কোন অভিপ্রায় একটি স্থায়ী স্বভাব এবং এটি বিশেষ পন্থায় ক্রিয়া এটি ব্যক্তির এমন এক বিশেষ মানসিক ও নৈতিক গঠন বা অভ্যাসগত ইচ্ছার প্রবণতা‌ যা তাকে সমগ্র ব্যক্তিত্বের একটা গুণ


এখন আমরা মানুষের আচরণ নিয়ে আলোচনা করব:


আচরণ:


আচরণ বলতে ব্যাপক অর্থে ঐচ্ছিক- অনৈচ্ছিক সকল ক্রিয়া যা কোন লক্ষ্যের দিকে ধাবিত হয় সেগুলোকে বোঝায়


হার্বাট স্পেন্সার এ অর্থেই আচরণ শব্দটি ব্যবহা র করেছেন অনৈচ্ছিক ক্রিয়াগুলো যদি ও একটি লক্ষ্যের দিকে পরিচালিত হয় না, একটা লক্ষ্যের ধারণার দ্বরা ও ক্রিয়াগুলোকে আচরণের অন্তর্ভূক্ত করা যায় না কারণ অনৈচ্ছিক ক্রিয়াগুলোকে ভাল বা মন্দ, উচিত বা অনুচিত কিছুই বলা যায় না নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ঐচ্ছিক ক্রিয়াকে আচরণের অন্তর্ভুক্ত করা হয় কারণ ঐচ্ছিক ক্রিয়া কোন উদ্দেশ্য সাধনে জন্য করা হয় অভ্যাসগত ক্রিয়া ও আচরণের অন্তর্ভুক্ত কেননা অভ্যাসগত ক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়া হলে ও ঐচ্ছিক ক্রিয়ার পুন:পুন: সম্পাদনের ফল সুতরাং নীতিবিজ্ঞানে আচরণ বলতে ঐচ্ছিক ও অভ্যাসগত আচরণ উভয় ক্রিয়াকেই বুঝায়


আমাদের সমাজের প্রতিটি মানুষের উচিত সবার সাথে ভালো ব্যবহার করা বিপদে-আপদে সাহায্যে হাত বাড়ানো, সমগ্র মানুষের দু:খকে নিজের করে ভাবা আমরা মানুষ বেঁচে আছি, বেঁচে কি থাকবো? কত দিনই বা আমরা বেঁচে থাকবো আসুন না এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে আপরের জন্য কিছু করি ভাল আচরণ দিয়ে,ভাল ব্যবহার দিয়ে, ভাল চরিত্রের মাধ্যমে ইতিহাসের পাতায় না হয় ,মানুষের মনে একটু জায়গা করে নি


Saturday, January 3, 2009

অমর আত্মা



নশ্বর দেহে অবিনশ্বর আত্মার বসবাস যেমনে

আত্মশক্তি অর্জনে আত্মা রক্ত-মাংসের মানুষ আলোকিত করে তেমনে।

আত্ম উপলব্ধিহীন অন্তঃসার শূন্যদেহের মধ্যে

নর্দমার পরিত্যক্ত দুর্গন্ধযুক্ত ময়লার মতো ছড়িয়ে থাকে।

সৃষ্টি ও স্রষ্টার শাশ্বত প্রেম রহস্যময়তায় ঢাকা থাকে যেমনে

আত্মা ও ঢাকা থাকে নশ্বর দেহের ভেতর তেমনে।

আত্নানুসন্ধান অনন্ত জীবনের পথ প্রদর্শনের আশায়

অনায়াসে পরিস্ফুটিত পুষ্পের সৌরভ জোটে তাতে।

একাগ্রচিত্তে দুনিয়ার মায়া ছেড়ে প্রার্থনায় নিমগ্ন হলে

সৃষ্টির সেরা মানব জীবন যায় না বিফলে।

পৃথিবী সৃষ্টির সূচনালগ্নে অসীম আকাশের দিকে চেয়ে

প্রভু তুমি জ্বেলে রেখেছিলে নূর-নক্ষত্র রাজিগুলো ঐ আকাশের পথে।

যে নক্ষত্রের আলোয় আদিম মানব-মানবীর প্রেম

পাপাধারে খুঁজে পেলো পূন্যের পথ, অশুভ হল দূর।

আত্মা কখনও মরে না সে বেঁচে থাকে তার ভাল কর্মের মাঝে

ঘুড়ে বেড়ায় অনন্ত অসীম সীমানার ভেতরে অমর হওয়ার সাধনার মধ্যে।


Thursday, January 1, 2009

শুভ নববর্ষ


ওই শোনো গো নতুন দিন বুঝি এল আজ
তাই বধু রাখ তোমার হাতের যত কাজ,
নতুন দিনকে বরণ করে নিও বধু তোমার করে
শুনছ না কি তোমার গৃহদ্বারে,
ঘরের শিকলটি কে নাড়ে এমন শিশির ভেজা ভোরে।
দেখ বধু ঘরের দ্বার খুলে,
বরণ করে নিও বধু তার হাত দুটো ধরে।
নিও বধু মাথার ঘোমটা টেনে,
শীতের কুয়াশা ভেজা ভোরে চিনবে কি তারে
যদি সে আসে অচেনা সুরের মত করে।
নতুন আশার আলো সঞ্চার করে,
বরণ করো তাকে মিষ্টি হাসি দিয়ে;
নতুন দিনকে নতুন ভালবাসা দিয়ে।

স্বাগতম নতুন বছর ২০০৯ । এসো নতুন স্বপ্ন ,নতুন সম্ভাবনা নিয়ে। নতুন কিছু সৃষ্টির সুখে ,নতুন উল্লাসে ।আবেগের তরঙ্গে ভেসে নতুন আবেগ সৃষ্টির সুখে। ভালবাসার আশার সঞ্চার করে, নব দিগন্ত উন্মোচন করে। এসো হে নতুন বছর ডিজিট্যাল বাংলাদেশে। সবার মাঝে ডিজিট্যাল সুখে দুখে পাশে থাকবার হয়ে। এসো আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশে শীতের শিশির ভেজা সকালে হাসির প্রদীপ হাতে নিয়ে এই দেশের প্রতিটি ঘরে।